“Difference between Physical Intimacy & Sexual Affection and it’s Influence on our Relationship”

বছর খানেক আগে একটি সিনেমা দেখেছিলাম, খুব সম্ভবত স্বস্তিকা মুখার্জির তাসের ঘর। যেখানে একজন গৃহবধূ সারাদিন একা একা সময় কাটায়। তার স্বামী শুধু অফিস করেন, বাসায় এসে খাওয়া দাওয়া করেন। সপ্তাহে বা মাসে দু একবার যৌন মিলন করেন দায়সারা ভাবে। অথচ উনি ভাবেন না উনার স্ত্রীর সারাদিন কিভাবে কাটে, কিংবা উনি নিজেও কোন বিষয়টা কে মিস করে যাচ্ছেন। ওই সিনেমাটা দেখার পর আমার তখন মাথায় একটা জিনিসই চলছিল যে ওদের মাঝে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স থাকলেও ইন্টিমেসি নেই কেন? এরপর বহু ক্লায়েন্টের অভিজ্ঞতা, পেশাগত জ্ঞান এবং অন্যান্য সম্পর্কের ডায়নামিক্স বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখতে পেলাম মানুষের ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি এবং সেক্সুয়াল এফেকশন সম্পর্কে ধারণা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। তাই ভাবলাম এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। কেননা অধিকাংশ দাম্পত্য কলহ এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় ইন্টিমেসির অভাব থেকে যা প্রথমে কেউ নোটিশ করেন না, যখন সেটা প্রকট আকার ধারণ করে বিচ্ছেদ বা লং টার্ম ক্ষতির দিকে নিয়ে যায় তখন আমাদের আর সুযোগ থাকে না ঠিক করা। আর অধিকাংশ মানুষ জানেই না সমস্যা টা কোথায়? তাই আজকের এই আলোচনা, ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি এবং সেক্সুয়াল এফেকশনঃ পার্থক্য ও প্রভাব নিয়ে।

Affection এর যথাযথ বাংলা হলো স্নেহ, ভালোবাসা, আদর বা অনুরাগ। সেক্সুয়াল এফেকশন হলো যৌনতার উদ্দেশ্যে নিজের অনুরাগ, ভালোলাগা প্রকাশ করা। যার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য থাকে যৌন মিলন করা বা সেই আগ্রহ প্রকাশ করা। যখন দুইজন ব্যক্তি যৌন মিলন (পেনিট্রেশন) করে তখন তাকে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স বলা হয়। পেনিট্রেশন এর আগে পরে যে সকল কাজ আমরা করে থাকি সেগুলোকে আমরা সেক্সুয়াল এফেকশন বলতে পারি। মূলত প্রাণী জগতে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স করা হয় প্রজনন (রিপ্রোডাকশন) করার উদ্দেশ্য, তবে শুধু মাত্র মানুষ হলো একমাত্র প্রাণী যারা প্রজননের উদ্দেশ্য ছাড়াও মাত্র আনন্দ ও ভালোবাসা প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে বা যৌন তাড়না থেকে যৌনমিলন করে থাকে, এবং এই উদ্দেশ্যে এফেকশন প্রকাশ করে থাকে। পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে যেকেউ সেক্সুয়াল এফেকশন প্রকাশ করতে পারেন বা ইন্টারকোর্স করতে পারে । তবে সামাজিক ভাবে ও আইনগত ভাবে নিষিদ্ধ সকল প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত যৌন মিলন ও এফেকশন যেমন ধর্ষণ, ম্যারিটাল রেইপ, শিশু বলাৎকার, যৌন নির্যাতন, পশুপাখি মিলন ইত্যাদিকে আমি এই আলোচনার বাইরে রাখছি। যেহেতু আমার উদ্দেশ্য শুধু সম্পর্কে ইন্টিমেসির প্রভাবকে ব্যাখ্যা করা। যদি উপরোক্ত কোন প্রকার অনাকাংক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন আপনি হোন তবে অবশ্যই আইনি সহায়তা নিন এবং সামাজিক ও মানসিক সাহায্যের জন্য বিশ্বস্ত মানুষদের কে জানান।

এইবার আসি ইন্টিমেসি নিয়ে আলোচনায়, মূলত ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি বিষয়ে। ইন্টিমেসি অর্থ হচ্ছে ঘনিষ্ঠতা। এই ঘনিষ্ঠতা অনেক রকমের হতে পারে, সেই সাথে আমাদের মানসিক ভাবে বেড়ে উঠার ও বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন ধরণের ইন্টিমেসি। ইন্টিমেসি বা ঘনিষ্ঠতা বিশয়টা আসলে কি?

যখন কেউ আমাদের খুব কাছের হয়ে উঠে, যাকে খুব আপন লাগে এবং যার সাহচর্যে আমাদের শান্তি লাগে তখন তাদের কে আমরা এলাউ করি আমাদের সংস্পর্শে আসার। এইটা হতে পারে আবেগীয়, বুদ্ধিবৃত্তিক, আধ্যাত্মিক, অভিজ্ঞতালব্ধ অথবা শারীরিক ঘনিষ্ঠতা। এই ঘনিষ্ঠতার মাধ্যমে আমাদের একটি সংযোগ স্থাপিত হয় যেখানে আমরা মনে করি অপরদিকের মানুষটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরণের ইন্টিমেসি বা ঘনিষ্ঠতা আমরা দেখতে পাই আমাদের মাঝে, যেমন যখন কারো সাথে আমরা নিজেদের সকল অনুভূতি নির্দ্বিধায় শেয়ার করতে পারি এবং অপর সাইডে থাকা মানুষটাও সেটা বুঝতে পেরে সহমর্মিতা প্রকাশ করে তখন সেটাকে আমরা আবেগীয় ঘনিষ্ঠতা বা ইমোশনাল ইন্টিমেসি বলতে পারে। তেমনি কিছু মানুষের সাথে আধ্যাত্মিক নানা আলোচনায় আমরা কানেক্টেড ফিল করতে পারে তখন তার সাথে তৈরী হয় আমাদের স্পিরিচুয়াল ইন্টিমেসি। বিভিন্ন ধরণের ইন্টিমেসির মধ্যে অন্যতম ও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো শারীরিক বা ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি।

ফিজিক্যাল বা শারীরিক ইন্টিমেসি বলতে বুঝায় স্পর্শ নির্ভর ঘনিষ্ঠতা। যেহেতু শারীরিক স্পর্শের বিষয় আছে তাই প্রথমেই সবার মাথায় চলে আসে যৌনতার বিষয়টি। কিন্তু দুইটির মধ্যে মৌলিক কিছু পার্থক্য আছে যা কিছুক্ষণ পরেই পরিষ্কার করবো। এখন শুধু একটি কথাই মনে রাখা প্রয়োজন, শারীরিক ঘনিষ্টতা বা স্পর্শ মানেই যৌনতা না, আবার যৌনতা মানেই ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি না। তবে রোমান্টিক পার্টনার দের মাঝে দুইটির সংমিশ্রণ থাকতে পারে এবং আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুইটার মিশ্রণ দেখা যায়। কিন্তু উল্লেখ্য যৌনতা বিহীন শারীরিক স্পর্শ আমাদের আবেগ অনুভূতির প্রকাশ ও ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিভাবে?

আমাদের সকল প্রকার আবেগ তৈরী হয় আমাদের মস্তিষ্কের কিছু ক্যামিকেল এর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায়। অর্থাৎ বাইরের কোন স্টিমুলাস বা ঘটনার প্রেক্ষাপটে আপনার মাঝে যে কোন চিন্তা বা প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে যার ভিত্তিতে আপনার আবেগ তৈরি হচ্ছে। আর এই আবেগগুলো যখন আমরা শারীরিক ভাবে অনুভব করি তখন তাকে বলছি আমাদের অনুভূতি। যেকোন আবেগ বা অনুভূতির চূড়ান্ত বহিপ্রকাশ হলো শারীরিক প্রতিক্রিয়া। এই জন্য খেয়াল করবেন যখন আপনি রেগে যান বা ভয়ে পেয়ে যান বা অবাক হয়ে যান তখন আপনার চোখ বড় হয়ে যায়, হার্টবিট বেড়ে যেতে পারে, অনেকে শারীরিক নানারকম ব্যথার অভিজ্ঞতাও পেতে পারেন। অন্যদিকে যদি আনন্দের বা উচ্ছাসের কিছু হয় তখনো সেটা আপনি শারীরিক ভাবে অনুভব করতে পারবেন।

জন্মের পর থেকে আমাদের বেশ লম্বা একটা সময় কাটে বাবা মায়ের সংস্পর্শে, অর্থাৎ আমি কান্না করলে তারা আমাকে জড়িয়ে ধরে, আমি খুশি হলে তারা আমাকে কোলে নিয়ে থাকে, এমনকি ভয় পেলে বা যেকোন প্রকার পরিস্থিতিতে অধিকাংশ সময় আমি তাদের সংস্পর্শে থাকি। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় আমি যখন বড় হতে থাকি তখন এই স্পর্শের পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে আমরা ধীরে ধীরে আমাদের অনুভূতিগুলো সম্পর্কে অনিরাপদ বোধ করি। কেননা ছোটবেলা থেকেই আমার সবগুলো অনুভূতি ভ্যালিডেট করার একমাত্র উপায় ছিল স্পর্শ, কিন্তু ধীরে ধীরে মুখের ভাষা তৈরি হওয়ার সাথে সাথে আমরা স্পর্শ থেকে দূরে সরে আসি, মৌখিক ভ্যালিডেশন নির্ভর হয়ে পড়ি। জীবনের একটি পর্যায়ে এসে আমরা নানা রকম জাজমেন্ট এবং পরিস্থিতির মুখোমুখি হই, ফলে এক সময় এই মৌখিক ভ্যালিডেশন আমাদের অনুভূতিগুলো কে সবসময় স্বীকার করতে পারে না। তখন তার দরকার পরে স্পর্শের। আর এই স্পর্শ সে মনের অজান্তেই খুজে ফেরে নিজের আপন মানুষের কাছে থেকে। যদি সেটা না পায় তখন সে আরো বেশি অনিরাপদ এবং খারাপ লাগা অনুভব করে, কিংবা কোন ইমোশনাল ক্রাইসিসের সময় ভেঙ্গে পরে। তখন তার প্রয়োজন পরে স্পর্শ নির্ভর ইমোশনাল ভ্যালিডেশন, যেমন যখন কাছের কেউ মারা যায় তখন আমরা এতটাই কষ্ট পাই যে পাশে যে বন্ধুটি থাকে তাকে জড়িয়ে ধরে কাদি। তেমনি যখন খুব আনন্দের কোন ঘটনা ঘটে তখনও একই কাজ করি। এইটা ইংগিত করে যে আমাদের এই নিডগুলো কতটা প্রবল আকারে রয়েছে কিন্তু শুধু মাত্র বড় কোন ঘটনা ঘটলেই আমরা এমনটা করি, অথচ এইটা হতে পারে হেলদি প্র্যাক্টিস। কিন্তু কাদের সাথে?

কাদের সাথে আমাদের এই স্পর্শ নির্ভর সম্পর্কগুলো গুরুত্ব পায় আমাদের কাছে সেটা নির্ভর করে আমাদের ছোটবেলার নানা অভিজ্ঞতা, বাবা মা ভাই বোন বা কেয়ারগিভারদের সাথে আমার সম্পর্ক, কোন ট্রমা বা এবিউজের ঘটনা, ইত্যাদি ইত্যাদি ফ্যাক্টরের উপর। কিন্তু বেসিক লেভেলের কথা যদি বলি এই বিশয়গুলো আমরা চাই বাবা মা কিংবা ভাইবোনের কাছে, বন্ধু বান্ধব, সিনিয়র জুনিয়র, কিংবা রোমান্টিক পার্টনারের কাছে। এবং অবশ্যই এই মানুষগুলো হতে হবে দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত এবং আপনার নিজস্ব কমফোর্ট জোনের মানুষ, তবেই তাদের কে আপনি এলাউ করতে পারবেন আপনার সংস্পর্শে।

এইবার আসি কি ধরণের হতে পারে এই ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি বা স্পর্শ নির্ভর ঘনিষ্ঠতা সে বিষয়ে। বাবা মা বা বন্ধু বান্ধবের একটা হাগ, হাত ধরে পাশে থাকা, মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া, প্রবল কষ্টের বা আনন্দের মুহুর্তের জড়িয়ে ধরা ইত্যাদি, যারা রোমান্টিক পার্টনার তাদের জন্যেও উল্লেখ্য কাজগুলো করা জরুরী পাশাপাশি প্রতিদিন চুমু খাওয়া, জড়িয়ে ধরা, কাডল করা ইত্যাদি। এই কাজগুলো আমাদের অনুভূতিগুলো কে যেমন ভ্যালিডেট করে তেমনি আমাদের মধ্যকার বন্ডিং, কানেকশন এবং আন্তরিকতা বৃদ্ধি করে, এবং সম্পর্কগুলো আরো বেশি সতেজ ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। এবং এই আচরণগুলোর মাঝে কোন প্রকার যৌনতার উদ্দেশ্য নেই। তবে রোমান্টিক কাপল এই কাজগুলো করার মধ্য দিয়ে দুজনের সম্মতিতে যৌনতার দিকে এগিয়ে যেতে পারেন, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে এই কাজগুলো করা মানেই যৌন মিলন করতে হবে বা সেক্সুয়াল এফেকশন হতে হবে।

ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি বা স্পর্শ নির্ভর ঘনিষ্টতা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ধরণের স্পর্শ আমাদের রক্ত সঞ্চালন ব্যালেন্স রাখতে সাহায্য করে অর্থাৎ আপনজনের স্পর্শ ব্লাড প্রেশার ব্যালেন্স করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। তবে সব থেকে বেশি উপকার করে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য। কাছের মানুষটি (বাবা, মা, ভাই, বোন, বন্ধু বান্ধব, রোমান্টিক পার্টনার) যখন আমাদের কে নিরাপদ স্পর্শ করে তখন আমাদের স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমে আসে, আমাদের মুড কে চাঙ্গা করতে সাহায্য করে, আমাদের অনুভূতিগুলো কে মেনে নিতে সাহায্য করে, নিজেকে নিরাপদ বোধ করতে পারি এর মাধ্যমে। উল্লেখ্য যদি আমাদের অতীত কোন ট্রমা, এবিউজ বা এটাচমেন্ট ইস্যু থাকে তখন আমাদের জন্য এই স্পর্শগুলো গ্রহণ করাও কঠিন হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে প্রফেশনাল হেল্প নিয়ে নিজেকে রিকোভার করা জরুরী তবেই স্পর্শগুলো আমাদের কে সাহায্য করবে ভালো অনুভব করতে। এছাড়াও আমাদের একাকীত্ব দূর করতে সাহায্য করে, আমাদের মনে হয় আমি একা নই, আমাদের নির্ভরতার ও ভরসার জায়গা রয়েছে, ফলে ডিপ্রেশন, অ্যাংক্সাইটি সহ অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বহুলাংশে কমে আসে। তাই এই সম্পর্কগুলো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যখন কোন তীব্র অনুভূতির মধ্য দিয়ে যাই, আমরা চাই কেউ একজন পাশে থাকুক, আমাদের অনুভূতি গুলোকে ভ্যালিডেট করুক স্পর্শের মাধ্যমে। যেখানে থাকবে না কোন যৌনতা কিংবা অনিরাপদ কামনা, আমাদের প্রতি থাকবে শুধুই ভালোবাসা এবং সহমর্মিতাযুক্ত যত্ন ও শর্তহীন গ্রহণযোগ্যতা।

এতক্ষণ বললাম কেন স্পর্শ নির্ভর ঘনিষ্ঠতা বা ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি আমাদের দরকার, এখন বলি কিভাবে এই এই ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় এবং কোন কোন ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনা করতে হয়।

প্রথমতা ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি কখনোই হুট করে তৈরি হয় না, ধীরে ধীরে মানুষের সাথে মেলামেশা এবং নানা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরই কেবল আমরা বুঝতে পারি কাকে আমাদের এই ক্লোজ সার্কেলে এলাউ করবো। দ্বিতীয়ত নানা রকম পরিস্থিতে একেকজন মানুষ ও তার মনস্তত্ত্ব পরিবর্তন হতে পারে, তাই সবসময়ের জন্য এই মানুষগুলোই থাকবে এমন প্রত্যাশা আমাদের বিচ্ছেদের কষ্টকে বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই সম্পর্কের বিবর্তন কে মেনে নেওয়ার মানসিকতা আমাদের থাকাটা জরুরী। এছাড়াও নিজেদের ব্যক্তিগত নানা রকম অনাকাঙ্ক্ষিত অভিজ্ঞতা আমাদের এই ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি তৈরি করতে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।

তবে একটি হেলদি ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি তৈরি হতে পারে পরিবারের মধ্য থেকেই, বাবা মা ভাই বোন বা কেয়ার গিভার এর সাথে আমাদের সম্পর্কগুলো ছোটবেলা থেকেই। তাই এইখানে পুনস্থাপন করা তুলনামূলক সহজ হতে পারে অনেকের জন্য, তবে সবার জন্য এইটা প্রযোজ্য নাও হতে পারে। তখন আমাদের দরকার হয় পরিবারের বাইরের মানুষদের ইন্টিমেসি। তবে সেক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে সেগুলো হলোঃ

রেস্পেক্ট বা শ্রদ্ধাবোধ, অর্থাৎ একজন আরেকজনের পারিবারিক, ধর্মীয়,সামাজিক ও ব্যক্তিগত নীতি নৈতিকতা ও মূল্যবোধের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাবোধ আছে কিনা সেটা লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। আমার একজন মেয়ে বন্ধু হয়তো পছন্দ করে না তাকে কেউ স্পর্শ করুক, সেটা জেনেও আমি তাকে স্পর্শ করতে যাবো না, আমার উদ্দেশ্য যতই ইনোসেন্ট হোক না কেন। আর শ্রদ্ধাবোধ দীর্ঘদিন মেলামেশা করার পরই তৈরি হয়, একটা মানুষ সম্পর্কে জানার পর।

ট্রাস্ট এন্ড অনেস্টি, অর্থাৎ দুজন মানুষের মধ্যে যখন আস্থার জায়গা তৈরি হবে এবং অনুভূতিগুলো অনেস্ট ভাবে প্রকাশ করতে পারবে তখন স্পর্শ নির্ভর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হওয়া সহজ হয়ে উঠে। সেই সাথে চলে আসে সেফটি বা নিরাপদ বোধ করার বিষয়টি। অবশ্যই দুজন দুজনের কাছে নিরাপদবোধ করতে হবে, যেখানে অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকবে না। অনেকেই বন্ধুত্বের বা কাছের মানুষ হিসেবে নিজেকে ঘনিষ্ঠ করার চেষ্টা করে কিন্তু স্পর্শের বিষয়ে গিয়ে দেখা যায় সেখানে শুধুই যৌনতার উদ্দেশ্য, তাই এই বিষয়গুলো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত যাতে কোন ভাবেই অনাকাঙ্ক্ষিত কোন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে না হয়।

সর্বশেষ Acceptance এবং Compassion থাকা, অর্থাৎ দুইজন মানুষ একজন আরেকজনের অনুভূতিগুলোর প্রতি সহমর্মী হবে ও কোন প্রকার জাজ না করে মেনে নিতে পারবে তবেই আমরা একজন আরেকজনের প্রতি ঘনিষ্ঠ হতে পারবো। আর নিজেদের মধ্যকার যাবতীয় অনুভূতি ও অভিজ্ঞতাগুলো কাছের মানুষদের সাথে কমিউনিকেট করতে পারা আমাদের জন্য হতে পারে বিশাল অর্জন।

উপরের এই বিষয়গুলো খেয়াল করলে দেখবেন আমাদের সম্পর্কের ডায়নামিক্সগুলো কেমন, পরিবারের সদস্য থেকে বন্ধুবান্ধব, রোমান্টিক পার্টনার, সকলের মধ্যে কাদের সাথে আপনি কমফোর্ট ফিল করেন, কাদের স্পর্শ নিরাপদ এবং আপনার অনুভুতিকে ভ্যালিডেট করে, বিষয়গুলো যখন বুঝতে পারবেন তখন আপনার জীবনটা আরেকটু সহজ হয়ে উঠবে, সম্পর্কগুলি হয়ে উঠবে আরো উপভোগ্য ও নিরাপদ।

আর নিরাপদ ফিজিক্যাল ইন্টিমেসি বা স্পর্শ নির্ভর ঘনিষ্ঠতা শেখানোর এবং দেওয়ার ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি অবদান রাখতে পারেন আমাদের বাবা মায়েরা, বিশেষ করে আমাদের কিশোর বয়সে আমরা সবথেকে বেশি বিচ্ছিন্ন বোধ করি আমাদের অনুভূতি নিয়ে। বাবা, মা, ভাই, বোন হতে পারে আমাদের নিরাপদ আশ্রয় যেখানে আমরা নিরাপদে আমাদের অনুভূতি গুলো প্রকাশ করতে পারবো এবং ভ্যালিডেশন পাবো, সেক্ষেত্রে বাবা মা সহ পরিবারের সকলের উপরের ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনা করা প্রয়োজন যেখানে সন্তানের অনুভূতি কে জাজ না করে তাকে মেনে নেওয়াটা জরুরী। পরিবারের সাথে হেলদি ইমোশনাল ইন্টিমেসি ভবিষ্যতের বন্ধুত্ব এবং রোমান্টিক সম্পর্কগুলো তৈরি করতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে, যা ভবিষ্যৎ মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে বহুলাংশে।

যেকোন সম্পর্কের টানাপোড়েন বা ইমোশনাল ক্রাইসিস যখন নিজে নিজে হেলদি ভাবে ম্যানেজ করতে পারবেন না, তখন অবশ্যই প্রফেশনাল হেল্প নিবেন। একবার হেল্প নিলে এইটা শুধু আপনাকেই উপকৃত করবে না, বরং এইটা আপনার পরবর্তী প্রজন্মের দিকে প্রবাহিত হবে হেলদি প্র্যাকটিস হিসেবে। তাই নিজেকে জানুন, হেলদি সম্পর্ক তৈরী করুন এবং জীবনকে উপভোগ করুন আপনজনের সাথে।

ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্য।

বিনীত

ফয়সাল আহমেদ রাফি ফাউন্ডার এন্ড চিফ সাইকোলজিস্ট

ফয়সাল রাফি এন্ড এসোসিয়েটস

Image
Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco

Sinead Bailey

Volunteer
I greatly appreciate Faysal Rafi Bhaia's support during my hardest time. I took his sessions after trying with couple more psychologists and found his ones so helpful for me. Bhaia is always very important for counseling. He listened to everything I had to tell him. And he would suggest me something which was doable and wouldn't create much pressure on me. One more thing I want to add which I liked about his counseling that he went over my background, from the very beginning of my life, for understanding me better. To my understanding every patient is different and this is very important to know where they have come from and what thry have gone through in their past. He tried to know me first and after listening a lot from me he suggested me some solitions those perfectly worked for me. I absolutely loved the way he handeled my situation. I will be indebted to him for keeping me calm and patient during my most hard time of life. I wish him all the best with his career and all his future endeavours.

Azbina Rahman Oni

Client
আমি ভাইয়ার কাছে কখনো কাউন্সিলিং করিনি, তবে মনের স্কুলের মাধ্যমে রাফি ভাইয়ার ট্রেনিং এর ওয়ার্কশপ অংশগ্রহণ করার সুযোগ যেমন পেয়েছি, তেমনি এগুলো ভাইয়ার সাথে আয়োজন করার অভিজ্ঞতাও হয়েছে। তিনি কেবলমাত্র একজন সাইকোলজিস্ট হিসেবে না, মানুষ হিসেবেও অসাধারণ। আমার কাছে কেউ কাউন্সেলর রিকমান্ডেশন চাইলে প্রথমেই "ফয়সাল রাফি" নামটা আসে। বাংলদেশের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে আপনার মত আরো অনেক মানুষ দরকার আমাদের।

Fairooz Faizah Beether

Client
রাফি ভাইয়ার সাথে প্রথম যেদিন পরিচয় হয়েছিল, ওইদিন থেকে আজ পর্যন্ত মনের স্কুলের এবং আমাদের টিমকে কতটা সাপোর্ট দিয়েছে সেটা অতুলনীয়। কাজের পাশাপাশি রাফি ভাই মানুষ হিসেবেও একজন মনের মানুষ, সব ধরনের সাপোর্ট পেয়েছি ভাইয়ার থেকে পুরোটা সময়। মনের স্কুল সবসময় রাফি ভাইয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সবসময় এভাবে মনের স্কুলের পাশে থাকার জন্য।

Arif Islam

Client
আমি মানসুরা, নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম বেশ কিছুদিন আগে। হারিয়ে ফেললে ভুল হবে খুঁজেই পাচ্ছিলাম না নিজেকে আসলে। এখন ফিরিয়েছি নিজেকে, নতুন করে নিজের সাথে পরিচয় করিয়ে, যায় পুরো ক্রেডিট আমি ফয়সাল রাফিকে দিবো। হারিয়ে ফেলা ১০ টি বছর আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন এমনকি শিখিয়েছেন সব কিছুর মধ্যে ভালো থাকার কৌশল। তার চিন্তা ভাবনার কাছে আমার সমস্যাগুলো, কষ্টগুলো অদ্ভুত সুন্দর। কষ্ট বলতে আসলে কিছুই নেই। প্রতিনিয়ত নিজেকে মেরে ফেলতে চাওয়া মানুষটাকে শিখিয়েছেন, বুঝিয়েছেন জীবনের বেচেঁ থাকার উদ্দেশ্য। শিখিয়েছেন কঠিন পথগুলো কতটা সুন্দর মানিয়ে নিলে, হাজারো মানুষের ভীড়ে কতটা সুন্দর "বেচেঁ থাকাটা আমি" ধন্যবাদ রাফি স্যার, আমার নিজেকে গুছাতে হেল্প করার জন্যে।

Mansura Islam

Client
I've taken both individual and couple therapy with Faysal Rafi Bhaiya. This experience has changed my thinking ability and pattern for good. He's been very kind and attentive during the sessions. He has a personality where I had no problems sharing everything of my life. I would say, he has a great listening skill, which is a rare quality. Rafi bhaiya has gone through all parts of my life in details, remembering even small things I ever said, to find out the patterns and traumas in my life, which definitely made me so comfortable during the sessions. I would say this experience made me confident to overcome my problems, to understand and accept situation better than ever. I had and will recommend Faysal Rafi to my peers as a dependable psychologist in Dhaka. I wish him all the best.

Progga Paromita

Client

    WE PROVIDE

    Complete Mental Health Care For You And Your Loved Ones
    Faysal Rafi & Associates established with the aim of providing capacity building programs, trainings and consultations for mental health wellbeing of youth. Our programs are person centered, evidence based and solution focused, so that it can have maximum utilization of organization’s resources